... কারণ $E=mc^2$

যখন কোন বন্ধুর সামনে আমি আইনস্টাইনের কথা তুলি (যারা আসলে পদার্থবিজ্ঞানের সাথে সরাসরি জড়িত নয়) তারা একবাক্যে বলে ওঠে- " ওওওওও বুঝেছি !! ঐ যে ইই ইকুয়্যালস এম সি স্কোয়ার ($ E=mc^2 $) !!!"  অথবা বলে "হুমম!! ওই যে ওই বাউলা চুলের বুড়োটার কথা বলছিসতো?? "

হ্যাঁ , আইনস্টাইন হলো সেই বাউলা চুলের পদার্থবিজ্ঞানী যিনি $ E=mc^2 $ (ভয়াবহ জনপ্রিয় !!) সূত্রটি প্রবর্তন করে গেছেন । এবং মজার ব্যাপার হলো এটা এতটাই জনপ্রিয় যে -যাদের পদার্থবিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণাটাও নেই তারাও এই সূত্রের কথা শুনলে গম্ভীর হয়ে মাথা ঝাঁকান । আইনস্টাইন এর  - "energy was equal to mass times the speed of light squared"  এই বাক্যটির সাথে সাথে কিন্তু আরও কিছু প্রশ্ন চলে আসে ।

  • প্রথমত, যদি এই সূত্র সত্যি হয় তাহলে কি একজন ব্যক্তি চাইলে কোন বস্তুর ভরকে এনার্জিতে রূপান্তর করতে পারবেন, আবার এনার্জিকে ভরে এ রূপান্তর করতে পারবেন ?
  • দ্বিতীয়ত,  ভরহীন কোন বস্তুর এনার্জি কি অভিকর্ষ দ্বারা  প্রভাবিত হবে ?
  • তৃতীয়ত, কোন  তেজস্ক্রীয় পদার্থ বিকিরণ করতে করতে একসময় কি তারা ভরশুন্য হয়ে পড়বে ?
  • চতুর্থত,  সূর্যের ভরই কি এনার্জি তে রূপান্তরিত হয়ে সূর্য শক্তি হিসাবে বিকিরিত হয়?
courtesy: vecteezy.com

মজার ব্যাপার হলো আইনস্টাইন এর $E=mc^2 $ উপরের সবকটি প্রশ্নের জবাব দেয় । পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ নিউক্লীয়ার বোমের নাম জারবোম্বা (Tsar Bomba) । ১৯৬১ সালের অক্টোবরে মাত্র এই বোমটি পরীক্ষামূলক ভাবে রাশিয়ার দক্ষিন জ্যামালিয়ার উপর ফেলা হয় ।এবং এই বোমটি ৪৭ গ্রাম ( ২ আউন্স এর থেকেও কম) বস্তুকে এনার্জি তে রূপান্তরের মাধ্যমে আসে পাশের প্রায় ১০০ কিঃমিঃ এলাকাকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল । গত সাড়ে চার বিলিয়ন বছর ধরে আমরা সূর্যের যে আলো উপভোগ করছি সে শক্তি উৎপাদনের জন্য সূর্যেকে তার মোট ভরের মাত্র ০.০৩ ভাগ ভর ক্ষয় করতে হয়েছে ।

Taken by Hinodes Solar Optical Telescope on Jan. 12, 2007, this image of the sun reveals the filamentary nature of the plasma connecting regions of different magnetic polarity. Hinode captures these very dynamic pictures of the chromosphere. The chromosphere is a thin layer of solar atmosphere sandwiched between the visible surface, photosphere, and corona.
ছবিটি Hinode's Solar Optical Telescope এর সাহায্যে নেয়া হয়েছে। সূর্যের বিভিন্ন ধরণের magnetic polarity র plasma connecting region গুলোর বৈশিষ্ট্য এই ছবিতে ফুটে উঠেছে ।
মহাবিশ্বের প্রতিটি অণু-পরামানু , প্রোটন, নিউট্রন আর ইলেকট্রনের ভেতর এই প্রচন্ড শক্তির বিস্ময়টুকু লুকিয়ে আছে । এই সুত্রটি যে শুধু কতটুকু ভরকে  কতটুকু এনার্জিতে রূপান্তরিত হচ্ছে সেটার হিসাব দেয় তা নয়। এটি আমাদেরকে নতুন একটি বস্তুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, যার নাম অ্যান্টি-ম্যাটার । অ্যান্টি-ম্যাটারকে বলা হয় "The most volatile substance ever manufactured" কারণ যখনই কোন অ্যান্টি-ম্যাটার একটি ম্যাটারের  সংস্পর্শে আসে সাথে সাথে বিষ্ফোরণের ঘটে এবং উভয়েই আবার energy তে পরিণত হয় (আবার থোর বড়ি খাড়ার মত $ E=mc^2 $ এসে হাজির হয় ) ।

অন্যভাবে বলা যায় - আমরা energy কে ম্যাটার এবং অ্যান্টি-ম্যাটার দুটোতেই পরিবর্তন করতে পারি । এবং ঠিক এই ধারণা থেকেই particle  accelerators এর ধারণা জন্ম নিয়েছে । আমাদের লক্ষ্য প্রচন্ড পরিমাণ শক্তিকে একসাথে করে নতুন বস্তুর সৃষ্টি করা । যখন আসলেই এটা সম্ভব হবে, তখন একথা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করে নেবে যে- হ্যাঁ, সত্যি সত্যি mass কে energy এবং energy কে mass এ রূপান্তর করা সম্ভব । জানেন? এটা কীভাবে সম্ভব??? ....কারন $E=mc^2$ ।

(আজ সকালে seed magazineEthan Siegel এর এই আর্টিকেলটা পড়ছিলাম। পড়তে পড়তে মনে হলো এটা অনুবাদ করলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ । সাথে সাথে বসে গেলাম অনুবাদ করতে । আর publish করে দিলাম আমার ব্লগে ।)

**পূর্বে প্রকাশিতঃ Mad Science Blog (সেপ্টেম্বর, ২০০৯)